বেশীদিন নয়, এই তো সেদিন, বছর তিনেক আগে,
আইনস্টাইন হঠাৎ করিয়া রাতের প্রথম ভাগে,
আপেক্ষিকতা অংক কষিয়া, করিলেন সমাধান,
ভর ও শক্তি দেখা দিলো শেষে দুই নামে একই প্রাণ।
রাত কাটে নাকো, সময় থামিয়া স্থির হয়ে থাকে তার,
সকাল হইবে, সবাই জানিবে, রাত বাঁকী কত আর?
হইচই হবে, উৎসব হবে, দেশে হবে সমৃদ্ধি,
এই সমাধান দেশে এনেদেবে জ্যামিতিক প্রবৃদ্ধি।
স্বল্প খরচে অসীম শক্তি হাতের মুঠোয় রবে,
বছর ঘুরতে বিশ্বে স্বদেশ এক নম্বর হবে।
অবশেষে রাত ফিকে হয়ে আসে, বাজে আজানের ধ্বনি,
বাড়ির পাশের মোরগ বাবাজি ডেকে ওঠে তক্ষনি।
মুসুল্লিগণ ফজর আদায়ে মসজিদ পানে ছোটে।
কপাট খুলিয়া আইনস্টাইন রাস্তায় আসিয়া জোটে।
কারে কই? করে কই? ভেবে ভেবে খুঁজিনা বেড়ান তিনি
অদুরে তখন পাগলীর চুলে পাগল দিতেছে বিনি।
সে তখন ভাবে, সবাই মগ্ন ইবাদাত চিন্তাতে
বলিলে এসব পাগল ভাবিবে সব মাটি হবে প্রাতে।
সারাদিন ধরে বলার মানুষ জুটছিলোনা একজনও
কবি, শিক্ষক, পেশাজীবী কারো আগ্রহ নেই কোন।
দেখিলো সবাই পেরেশান আছে নিজ নিজ টেনশনে
কারো কথা কেহ শোনেনা, সবাই বাঁশের গিট্টু গোনে।
কয়টা ঢুকিলো নিজের পেছনে কটা দেনা রহিয়াছে
কয়টা ঠেকাতে খরচা ক’টাকা? জমা কত জেবে আছে?
কাহারে কহিবে, কারে বুঝাইবে ভাবিয়া পায়না কুল
এত সময়ের চেষ্টা কি তবে হয়ে যাবে সব ভূল?
এই সূত্রের প্রমানের তরে অর্থের প্রয়োজন
কোথাহতে সেই খরচার টাকা করা যাবে আয়োজন?
সরকার আছে, টাকা তার কাছে অগনিত জমা রয়,
তাদের বোঝালে দেশের স্বার্থ বুঝিবে সে নিশ্চয়।
সরকারী সব অফিসে অফিসে ধর্না শুরুযে হলো
তাহাদের সব ম্যানেজে বছর পাঁচেক চলিয়া গেল।
নতুন চিন্তা গবেষনা গুলো সেই থেমে আছে কবে!
এইটার রফা হইলে তখন ওগুলোও শুরু হবে।
বহুত চেস্টা তদবীর শেষে রাজি হয় সরকার
বিশেষজ্ঞের এক কমিটির মতামত দরকার।
আমলা কামলা রাজনীতিবিদ সবমিলে আটজন
তাহাদের নিয়া সচিবালয়েতে কমিটি হল গঠন।
এইবোর্ড যদি পাশ করে দেয় তবে এর গতি হবে
শিক্ষিত আর জ্ঞানী গুনীরাই এই কমিটিতে রবে।
আইনস্টাইন টেনশনে ঘাম মোছেন রুমাল দিয়ে
সবটুকু ফের সতর্কভাবে পুনরায় দেখে নিয়ে
যখন আসিয়া রুমে বসিলেন মনে হলো কাঠগড়া
এক আসামীর বিচার করিতে আট বিচারক ভরা।
পরিচয় শেষে আইনস্টাইন যেই করিলেন শুরু,
ওধার হইতে থামাইয়া দিয়া প্রশ্ন ছুড়িনা মারে
পিতার নাম কি? কি করিতো তিনি? জানেন তো নিশ্চয়
এই তহবিল “লডাইয়ের কোটা” সাধারণ এটি নয়।
লডাইয়ের কোন ছবি-টবি আছে? কিংবা কোন সনদ?
সেটাই দেখিবে যাচাই করিয়া আমাদের পর্ষদ।
থাকলে বসেন, না থাকলে কেন সময় নষ্ট করা?
সাধারন যারা তাহাদের তরে আর নাই কিছু ধরা।
হতাশ হইয়া আইনস্টাইন নদী তীরে নির্জনে
পেছনের কথা স্মৃতির রোমন্থনে
দিন-রাত শুধু অংক কষিয়া সময় কাটিয়া গেছে
লড়াই করিলে এই অংকের
অবশেষে তার উপলব্ধিতে ভূলটা পড়িয়ে ধরা-
আবিস্কারের চাইতে এদেশে জরুরী “লড়াই করা”।