ছোট বেলা থেকেই
বাবা মায়ের কোন খবর নেই।
আবছা আবছা মনে পড়ে মায়ের কথা।
চৈত্রের গরমে, আচলদিয়ে আমার মুখ মুছিয়ে দিচ্ছেন।
কেমন যেন একটা গন্ধ, মায়ের,
সেজন্যই মনে হয় তরকারি আড়ৎতে
পচা তরকারির ঘ্রানকে এত আপন মনে হয়, মায়ের কথা মনে পড়ে।
মার খাওয়ার প্রথম দিনের কথা মনে আছে
আগের রাতে খাবার জোটেনি, খুব সকালেই ক্ষুথার জ্বালায় ঘুম ভেঙ্গে যায়
আড়ৎ এর ভিতর ঢুকে দুইটা বেগুন লুঙ্গির ভিতর ঢুকাতেই
উত্তরাঞ্চলের সেই মোটা তাগরা ব্যাপারিটা দেখে ফেলে
আর যায় কোথায় ঘন্টা খানের মার,
তারপর খুঁটির সাথে বেঁধে রাখে আমাকে।
মারের ব্যাথার চেয়ে ক্ষুধার জ্বালাটাই তখন বেশী জানান দিচ্ছিলো।
শেষমেশ, স্যার যখন এলেন বাজারে, তখন আমাকে ছাড়ালেন
খুবই দয়ার সাগর এই স্যার
আসলেই বাজারে যেন, সালামের একটা হিড়িক লেগে যায়
যে যেখান থেকে পারে সারের ব্যাগ ভর্তি করে দেয়
স্যারের ব্যাগ টেনে দিয়েছিলাম, গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে আসার সময়
উনি বিশটা টাকা দিলেন,
সেটা দিয়েই পেটের জ্বালাটা কমালাম সেদিন।
তারপর কত দিন, কত বছর কেটে গেল
ছিচকে চুড়ি থেকে, চুড়ি, ছিনতাই, বাটপারি সব অভিজ্ঞতাই হয়েছে।
জেলেও গেছি দুএকবার।
মাঝে মাঝে স্যার এর বাসার সামনে গিয়ে স্যারকে দেখি
জমকালো একটি গাড়িতে চড়েন, সাথে পুলিশ আরো অনেক লোক
লোকটি জন্য একরকম মায়া আমার।
দেখলেই বড় আপন মনে হয়।
বাবার কথা মনে হয়।
বাবাও তো এমন একজন হতে পারতো!
তাহলে তো, খেয়ে না খেয়ে, যেখানে সেখানে ঘুমিয়ে,
লোক জনের লথিগুতো খেয়ে বড় হতে হত না।
নিজেকে বোঝাই, কপাল, কপাল।
দিন যায়, মাস যায়, বছর যায়-
অনেক কলকৌশল শিখি
অনেক ঝুঁকি নিয়ে কাজ করি, পেট চালানোর জন্য
এখোনো ঘুমাই, এখানে সেখানে।
এর মধ্যে, একদিন ছিনতাই করতে গিয়ে ধরা পড়লাম
আজকাল আর লোকজনের আগের মত মায়া নাই
যে যেখান থেকে মারে
যেখানে খুশি সেখানে মারে
যা দিয়ে খুশি মারে।
গন ধোলাইর একটা মজা আছে
প্রথম এক মিনিট টের পাওয়া যায়
তার পরেরটা আর তেমন গায়ে লাগেনা।
কতক্ষন মার খেয়েছি জানি না
হুশ আসতে দেখি- হাসপাতালে আছি
থানা, পুলিশ, জেল দুই তিন বছর শেষ।
আবারো রাস্তায়।
পুরোনো কাজ ভাল লাগে না
জায়গা দখলের প্রতিযোগিতা
ধরা পরার ভয় মারের ভয়
কিন্ত পেটের ক্ষুধা!!
অনেক দিন স্যারকে দেখিনা
সেদিকে হাটা শুরু করলাম।
আমি জানি না, তিনি কি আমাকে চেনেন?
চেনার কথা না।
চেনার দরকার ও নেই। এটা আমার একান্ত ব্যাক্তিগত অনুভুতি।
বাসাটা খালি খালি মনে হচ্ছে
দারোয়ান নেই, গেট বন্ধ
মনেহয় কোথাও বেড়াতে গেছেন।
সামনের চায়ের দোকানে বসলাম
এককাপ চা এবং একটি সিগারেট নিতে নিতে
ঐ বাসার কথা জিজ্ঞেস করলাম
স্যারের কথা জিজ্ঞেস করলাম
দোকানদার আমাকে চেনে, আমি এখারে বহুবার এসেছি
ও বলল ”তোমার স্যারে তো দুর্নীতি করে ধরা খাইছে, জেলে আছে”
তার পরিবার গ্রামে চইলা গেছে।
হঠাৎ মনের মধ্যে একটা অদ্ভুত অনুভুতি হল
স্যারকে আরো বেশী আপন মনে হতে লাগল
তিনি আমার, আমাদের, সত্যিকারের জনক।
২৬.১১.১
আগের রাতে খাবার জোটেনি, খুব সকালেই ক্ষুথার জ্বালায় ঘুম ভেঙ্গে যায়
আড়ৎ এর ভিতর ঢুকে দুইটা বেগুন লুঙ্গির ভিতর ঢুকাতেই
উত্তরাঞ্চলের সেই মোটা তাগরা ব্যাপারিটা দেখে ফেলে
আর যায় কোথায় ঘন্টা খানের মার,
তারপর খুঁটির সাথে বেঁধে রাখে আমাকে।
মারের ব্যাথার চেয়ে ক্ষুধার জ্বালাটাই তখন বেশী জানান দিচ্ছিলো।
শেষমেশ, স্যার যখন এলেন বাজারে, তখন আমাকে ছাড়ালেন
খুবই দয়ার সাগর এই স্যার
আসলেই বাজারে যেন, সালামের একটা হিড়িক লেগে যায়
যে যেখান থেকে পারে সারের ব্যাগ ভর্তি করে দেয়
স্যারের ব্যাগ টেনে দিয়েছিলাম, গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে আসার সময়
উনি বিশটা টাকা দিলেন,
সেটা দিয়েই পেটের জ্বালাটা কমালাম সেদিন।
তারপর কত দিন, কত বছর কেটে গেল
ছিচকে চুড়ি থেকে, চুড়ি, ছিনতাই, বাটপারি সব অভিজ্ঞতাই হয়েছে।
জেলেও গেছি দুএকবার।
মাঝে মাঝে স্যার এর বাসার সামনে গিয়ে স্যারকে দেখি
জমকালো একটি গাড়িতে চড়েন, সাথে পুলিশ আরো অনেক লোক
লোকটি জন্য একরকম মায়া আমার।
দেখলেই বড় আপন মনে হয়।
বাবার কথা মনে হয়।
বাবাও তো এমন একজন হতে পারতো!
তাহলে তো, খেয়ে না খেয়ে, যেখানে সেখানে ঘুমিয়ে,
লোক জনের লথিগুতো খেয়ে বড় হতে হত না।
নিজেকে বোঝাই, কপাল, কপাল।
দিন যায়, মাস যায়, বছর যায়-
অনেক কলকৌশল শিখি
অনেক ঝুঁকি নিয়ে কাজ করি, পেট চালানোর জন্য
এখোনো ঘুমাই, এখানে সেখানে।
এর মধ্যে, একদিন ছিনতাই করতে গিয়ে ধরা পড়লাম
আজকাল আর লোকজনের আগের মত মায়া নাই
যে যেখান থেকে মারে
যেখানে খুশি সেখানে মারে
যা দিয়ে খুশি মারে।
গন ধোলাইর একটা মজা আছে
প্রথম এক মিনিট টের পাওয়া যায়
তার পরেরটা আর তেমন গায়ে লাগেনা।
কতক্ষন মার খেয়েছি জানি না
হুশ আসতে দেখি- হাসপাতালে আছি
থানা, পুলিশ, জেল দুই তিন বছর শেষ।
আবারো রাস্তায়।
পুরোনো কাজ ভাল লাগে না
জায়গা দখলের প্রতিযোগিতা
ধরা পরার ভয় মারের ভয়
কিন্ত পেটের ক্ষুধা!!
অনেক দিন স্যারকে দেখিনা
সেদিকে হাটা শুরু করলাম।
আমি জানি না, তিনি কি আমাকে চেনেন?
চেনার কথা না।
চেনার দরকার ও নেই। এটা আমার একান্ত ব্যাক্তিগত অনুভুতি।
বাসাটা খালি খালি মনে হচ্ছে
দারোয়ান নেই, গেট বন্ধ
মনেহয় কোথাও বেড়াতে গেছেন।
সামনের চায়ের দোকানে বসলাম
এককাপ চা এবং একটি সিগারেট নিতে নিতে
ঐ বাসার কথা জিজ্ঞেস করলাম
স্যারের কথা জিজ্ঞেস করলাম
দোকানদার আমাকে চেনে, আমি এখারে বহুবার এসেছি
ও বলল ”তোমার স্যারে তো দুর্নীতি করে ধরা খাইছে, জেলে আছে”
তার পরিবার গ্রামে চইলা গেছে।
হঠাৎ মনের মধ্যে একটা অদ্ভুত অনুভুতি হল
স্যারকে আরো বেশী আপন মনে হতে লাগল
তিনি আমার, আমাদের, সত্যিকারের জনক।
২৬.১১.১
No comments:
Post a Comment