Thursday, November 16, 2023

আয়কর নোটিস ২০২৩

 

 ট্যাক্স অফিসের নোটিশ এসেছে

বলিয়াছে দেখা করতে
মনে ভাবিলাম, সারিয়াছে কাম
জম আসিতেছে ধরতে।
 
চালানের ফাইল, বিল ভাউচার
হিসাবের খাতাখানা
ব্যাংক ষ্টেটমেন্ট, অডিটের কপি
করিতেছি ফানা ফানা।।
 
ট্যাক্স অফিসের হয়রানি সেতো
নাকানি চুবানি খাওয়া।
মনে মনে ভাবি এর চেয়ে ভালো
বাঘের খাঁচায় যাওয়া।
 
দিনে টেনশন রাতে ঘুম নাই
কোনখান দিয়া ধরে?
কোন ভুল খানা ধরাইয়া দিয়া
নিজের পকেট ভরে!
   
অপারগ হয়ে সব কিছু লয়ে
পৌছলাম অবশেষে
সহকারী আপা মুচকি হাসিয়া
বলে বিজ্ঞের বেশে।
 
স্যার আসেনাই, টেনশন কেন?
সব হয়ে যাবে ঠিক
আমাদের দিকে চাহিয়েন ভাই
হাসিলেন ফিক ফিক।
 
বলি ভয়ে ভয়ে, কি করিতে হবে?
এগুলো কি দিব জমা?
বলিলেন তিনি; এসব কিছুতে
হইবেনা কিছু ক্ষমা।
 
পরির্শক যাইবে বাড়িতে
দেখিবে খুটিয়া সব
হাজার বিশেক দিবেন তাহাকে
পরে জানিবেন সব।

পরিদর্শ আসিয়া কহিলো
কোন কিছু ঠিক নাই।
হিসেবের খাতা বিল ভাউচার
যতই তারে দেখাই।
 
কোনখান থেকে কি ভূল হইলো
কিছু নাহি কন খুলে।
মুখখানা তার গম্ভীরকরে
কলম লইলো তুলে।
 
বিজ্ঞের মতো চশমাটা খুলে
বলিলেন অবশেষে
মনে হইতেছে কপাল খারাপ
যাইবেন বুঝি ফেঁসে।
 
বিশ হাজারের খামটি তুলিয়া
দিলাম তাহার হাতে।
চোখ ঘোচাইয়া বলিলেন তিনি,
কিছু হইবে না এতে!
 
স্যারের জন্য হইবে যে দিতে
আরো লাখ দুই তিন।
মনে ভাবিলাম পরিবার নিয়া
কাটিবে কিভাবে দিন।

ঘুষ না পাইলে কর ধরে দেবে-
আপিল যাইতে হবে;
আপিলের ঘুষ, উকিলের ফিস-
কর যা, সেটাই রবে।
 
সব শেষে আছে জামানত দিয়ে
ট্রাইবুনালের ফের-
সেটাসেট করে আরো ক্ষতি হবে-
অর্থ ও স্বাস্থ্যের।
 
সব কিছু হায় যদি চলে যায়
করের ঘুষের খাতে,
পরের বছর পরিবার নিয়া
ভাত জুটিবেনা পাতে।
 
হাত জোড় করে কহিলাম “দাদা
কিছু কম করা যায় না”?
তিনি হেসে কন কর ধরে দিলে
লাখ বিশেকেও হয় না।
 
মনে মনে ভাবি সারা বছরের
দশ লাখ আয় নাই
বিশ লাখ টাকা কোথা হতে দিবো
ভেবে কুল নাহি পাই।
 
অবশেষে রফা হল দুই লাখে
কিছু করও দিতে হবে;
সহকারী সেই আপার পাওনা
সেটাও মিটাতে হবে।
 
সারা বছরের নীট ইনকাম
হইয়াছে লাখ ছয়
ঘুষে আর করে গেল তিন লাখ
 তিন লাখ বাকী রয়।
 
মনে মনে ভাবি, হয়তো আমার
 হিসেবে রয়েছে ভুল।
কষ্ট করিয়া আমি আয় করি
ধনী হয় নেফাউল।।

 

No comments:

Post a Comment