Friday, May 15, 2015

জন্মেছি এই দেশে




যখন বুঝতে শিখেছি
তখনই দেখেছি স্বাধীন এদেশ
আশে পাশে যাকেই দেখেছি সবাই এদেশের নাগরিক
ধর্ম অথবা পরিবার যাকে ছোট বলেছে তাকেই ছোট বলে জেনেছি
যাকে বড় বলেছে তাকেই বড় বলে জেনেছি।
আরো কিছুদিন পরে দেখলাম
যার অর্থ বেশী তিনিই ক্ষমতাবান, তিনিই বড়।
আরো পরে দেখলাম।
যার যত ভোট, তিনি তত বড় মানুষ।
শিখলাম এ্টাই গনতন্ত্র।

জানলাম যুদ্ধের কথা, সাহসের কথা, চেতনার কথা, আত্মত্যাগের কথা।
রাজনীতির কথা।


সবই তো মানুষের জন্য!
সত্যি কি তাই?

মানুষ মানুষের জন্য যুদ্ধ করে মানুষ হত্যা করে!
মানুষ চেতনার জন্য মানুষ হত্যা করে!
মানুষ ধর্মের জন্য মানুষ হত্যা করে!
মানুষ রাজনীতির জন্য মানুষ হত্যা করে!

মানুষ যদি মরেই যায় তাহলে কি দরকার এসবের?

দেখলাম..
চলছে তিলে তিলে হত্যার মহাযজ্ঞ
খাদ্যে বিষ, অস্ত্রধারীরা সক্রিয়,
শ্রমিকের রক্তে বাড়ছে বিদেশী ব্যাংকের তহবিল
যে শিক্ষার কোন দাম নেই
সেই শিক্ষা অর্জনে শিক্ষার্থীর অভিভাবকের জীবনী শক্তির অবসান
চিকিৎসার ভেজাল দাওয়াই, চিকিৎসকের কসাই আচরন
জীবনদায়ী পরিবেশের বস্ত্রহরন, জীবন হরন
যেন পৃথিবীকে অবসবাসযোগ্য করার প্রতিযোগিতা চলছে প্রতিনিয়ত।


সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, জনগন রাজস্বদিয়ে যাদের পালন করে
তারাই এটুলির মত রক্ত চুষছে প্রতিনিয়ত জনগনের
এ যেন ইচ্ছাকৃত দুঃখ বিলাশ আমাদের...

আইন এক একজনের জন্য এক এক রকম
সুবিধা এক এক জনের জন্য এক এক রকম
সম্মান এক এক জনের জন্য এক এক রকম
সবই অর্থের জোরে অথবা ক্ষমতার জোরে ঠিক হয়
অভিজ্ঞতা, সৃজনশীলতা মানবিক মুল্যবোধের মুল্য সেখানে নেই বললেই চলে।

তবে কি স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন করার সময় এসেছে? কিংবা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে?
নাকি নাকি পুনর্বার যুদ্ধের সময় এসেছে?
মানুষ তো অনেকসময় ভুল প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করে।
অথবা অমানুষরা মুক্তির ফায়দা লোটে।
হয়ত অমানুষরা এখন সম্মোহিত করে রেখেছে সাধারনকে।
আমি এমন পোড়া কপাল, সম্মোহিত হওয়ার ক্ষমতাও আমার নেই।
আমাকে অসভ্য, অকৃতজ্ঞ, অসামাজিক বা পাগল যাই বলা হোক
আমার কিছুই করার নেই...
আমাকে বলতেই হবে, যতই তিরস্কৃত হই।
কেউ আমার সাথে থাকুক বা না থাকুক।
আমাকে ভালবাসুক বা না বাসুক।

জন্মেছি এই দেশে।

সাম্য (?) বাদ

গাহ সাম্যের গান?
অলীক স্বপ্ন দেখছি বসিয়া মুখেতে লইয়া পান!
সরকার আর জনতার মাঝে ফারাকতো বিস্তর;
সরকারী জীব কুলীণ শ্রেনীর, জনতা নীচুস্তর।
আইন কানুনের জটিল হিসাবে, জনতারা বঞ্চিত
যতটুকু আছে, সেটুকু পেতেও, টাকা লাগে অগনিত
দেবার বেলায় জনগন বেশী, তাহারাই কম দেবে,
আইনের মার প্যাঁচেই তাহার অধিক সুযোগ নেবে
সুযোগ, সুবিধা, জামাইয়ের কোটা সবই তাহাদের তরে
আয়, দান, সেবা সবার উপরে হুমড়ি খাইয়া পরে।
মন্ত্রী আবার তাহাদের তরে, ছোটান কথার ফুল্কি
যে কাজ তাদের, সেটাই হবে স্পিড মানির ভেল্কি
সদাই থাকেন অখুশী সকলে, খুশী করিবার তরে
জনতার হয় পকেট খালি, তাদের পকেট ভরে
স্পিড মানি, ঘুষ, উপহার, দৈনিক সব আছে
পে স্কেল, টাইম স্কেলও বছর ঘুরলে পাছে   
সরকারী সব অস্ত্রধারীরা, রক্ষকের ই বেশে
মারবে, কাঁটবে ভয় দেখাবে লুটবে অবশেষে।
চাকুরীর শেষে, দাড়াইলে এসে, জনগনের কাতারে
এজি অফিসের মাংসাশী কাক, কিছু খুটে খাবে তারে
কিছু খাবে তার, ডাক্তার বাবু, কিছু খাবে, প্রশাসন
বাকিসব খাবে সিস্টেম নামে প্রচলিত কুশাসন
সবাই আসিবে একটি সময়ে, একই কাতারের মাঝে
ভুলে যায় সবে, ক্ষমতা দাপট, সকলি হারাবে সাঝে
এদেশের প্রতি পরতে পরতে সাম্যের অনটন
প্রতিটি মানুষ সহে প্রতিদিন, সইবে কি আজীবন?

কবি নজরুল, করিয়াছে ভুল? গাহি সাম্যের গান?
তাহাকে ভুলিয়া, রচিছ তোমরা অসাম্যের সোপান!